সাবেক খাদ্য সচিবের বিরুদ্ধে আলফাডাঙ্গা মেয়রের পাল্টা সংবাদ সম্মেলন 

সাবেক খাদ্য সচিবের বিরুদ্ধে আলফাডাঙ্গা মেয়রের পাল্টা সংবাদ সম্মেলন 

নিজস্ব প্রতিবেদক:

ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় আলফাডাঙ্গা সদ্য সাবেক পৌর মেয়র আলী আকসাদ ঝন্টু  নিজেই জালিয়াতির শিকার বলে সাবেক খাদ্য বিভাগের পরিচালক এস একে আজাদের বিরুদ্ধে পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করেছেন।

 

৭ জানুয়ারি বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে আলফাডাঙ্গা পৌর বাজারের একটি চাইনিজ রেস্টুরেন্টে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

 

সংবাদ সম্মেলনে লিখত বক্তব্য পাঠ করেন  আলফাডাঙ্গা পৌরসভার  সদ্য সাবেক মেয়র আলী আকসাদ ঝন্টু।

 

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন – সম্প্রতি আলফাডাঙ্গায় খাদ্য বিভাগের সাবেক সচিব  এস এ কে আজাদ একটি সংবাদ সম্মেলন করে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন, মনগড়া বক্তব্য প্রদান করেছে।  তিনি আমাকে সামাজিক ভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার কু-মতলবে সংবাদ সম্মেলনে বানোয়াট বক্তব্য দিয়েছেন। যা আমার জন্য বিব্রতকর ও মানহীনকর।

 

আমি মেয়র হওয়ার পর তিনিই আমার সাথে বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে তুলেন ও বিভিন্ন সময় অর্থ লেনদেন করেন। তিনি অবসরে যাওয়ার পর দুর্নীতি দমন কমিশন দুদকের ভয়ে ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে আমার নিকট আলফাডাঙ্গা বাজার সংলগ্ন ৩.৭৫ শতক জমি ১ কোটি টাকা মূল্যে বিক্রয়ের প্রস্তাব দেন। এত টাকা আমার কাছে না থাকায় নগদ ২৫ লাখ টাকা ও পরবর্তীতে ৭৫ লাখ টাকা পরিশোধের শর্তে তিনি তার বন্ধু হাজী মঈনউদ্দীন আহমদের বাসায় উপস্থিত হয়ে কমিশন নিয়োগের মাধ্যমে আমার স্ত্রী মাকসুদা সুলতান পপির নামে জমিটি রেজিস্ট্রি মূলে লেখে দেন। এসময় তাকে সরল বিশ্বাসে তারিখ বিহীন ৭৫ লাখ টাকার একটি চেক লিখে দেই আমি। কথা ছিলো আমি বাকি টাকা নগদ পরিশোধ করলে তিনি আমার চেক ফেরত দিবেন। কথা মোতাবেক গত বছর ২০২৪ সালের জুলাই মাসের ২০ তারিখে তার বাকি ৭৫ লাখ টাকা পরিশোধ করি। কিন্তু তিনি আমার চেক ফেরত না দিয়ে বলেন চেকটি ঢাকায় রয়েছে আমার উপর আস্থা ও বিশ্বাস রাখো আমি দুদিন পর তোমার চেক ফেরত দিবো। এসময় তিনি ঢাকার শ্যামলীতে একটি বহুতল ভবনের ২ তলার ৪ টি ইউনিট ও গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানী উপজেলাধীন পিঙ্গুলিয়া মৌজায় ৫১ শতক জমি ৩ কোটি ৫০ লাখ টাকা দামে বিক্রির প্রস্তাব করেন। এজমির বায়না স্বরূপ আমি তাকে নগদ ২ কোটি ৬০ লাখ টাকা প্রদান করি। সে সময় তিনি আমাকে এ টাকার জামানত হিসেবে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড, শ্যামলী শাখার তার নামের  হিসাব নং-২০৫০২০৯০২০১১৮২৮০০এ থেকে চেক নম্বর এম সি এম-৯৬৬৪৮৬৩এর মাধ্যমে আমাকে ২ কোটি ৬০ লাখ টাকার একটি চেক প্রদান করেন। আমি চেক টি জামানত হিসেবে রেখে দেই।

তার কথা মতো তিনি আমাকে নির্ধারিত সময় অতিবাহিত হলেও জমি লেখে দেন না। জমি লেখার কথা বললেই- তিনি নানা বাহানায় সময়ক্ষেপণ করতে থাকেন। সেই সাথে আমার আগের ৭৫ লাখ টাকার চেক ফেরত দেন না।

পরে বিভিন্ন লোক মারফত জানতে পারি সাবেক এই সরকারি কর্মকর্তা একজন দূর্নীতিবাজ, প্রতারক, ঠকবাজ, লোভী মানুষ।  মানুষের সাথে ছলচাতুরীর মাধ্যমে বন্ধুত্বের  সম্পর্ক সৃষ্টি করে চতুরতার মাধ্যমে তিনি অর্থ হাতিয়ে নেন।  এসময় বুঝতে পারি তিনি আমার সরলতার সুযোগ নিয়ে আমার সাথে প্রতারণা করছেন। তিনি আমার দেওয়া চেক নিয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকে জমা দিয়ে প্রতারণা করতে পারেন এ বিষয় বুঝতে পেরে আমি সংশ্লিষ্ট ব্যাংকে আবেদন করে হিসাবটি স্টপ পেমেন্ট করাই এবং বিজ্ঞ আইনজীবীর মাধ্যমে লিগ্যাল নোটিশ পাঠাই কিন্তু তিনি নোটিশের জবাব বা চেকটি ফেরত না দিলে চেকটি উদ্ধারে প্যানালকোডের ৯৮ ধারায় আদালতে মামলা দায়ের করি। মামলাটি বর্তমানে চলমান রয়েছে।

 

একই সাথে ঢাকা ও কাশিয়ানীর জমি লেখে না দেওয়ায় আমার  বায়না দেওয়া টাকার বিপরীতে তার দেওয়া  ২ কোটি ৬০ লাখ টাকার  চেকটি রূপালী ব্যাংক, আলফাডাঙ্গা শাখায় আমার নিজ নামীয়  হিসাব নম্বরে টাকা সংগ্রহের জন্য জমা দেই। কিন্তু তার হিসাব নম্বরে অপর্যাপ্ত তহবিল থাকায় চেকটি ফেরত আসে। পরবর্তীতে চেকটি রাজধানীর শ্যামলিতে অবস্থিত ইসলামি ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট শাখায় জমা দিলেও অপর্যাপ্ত তহবিল মর্মে সনদ দিয়ে চেকটি ফেরত দেয় সংশ্লিষ্ট ব্যাংক।

 

তিনি শুধু আমার সাথেই প্রতারণা করেননি তার আপন সন্তানদের সাথেও প্রতারণা ও মিথ্যা মামলা দিয়ে তাদের হয়রানি করেছেন। সাবেক এই অবসর প্রাপ্ত খাদ্য পরিচালকের দ্বারা তার ঔরসজাত তিন সন্তান অত্যাচারিত ও হয়রানির শিকার হয়ে ফরিদপুর প্রেসক্লাবে বাবার বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেন। সে সময় বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় ‘বাবার বিরুদ্ধে সন্তানের এ কি অভিযোগ’ শিরনামে সংবাদ প্রকাশিত হলে নেট দুনিয়ায় আলোড়ন সৃষ্টি করে।

সাবেক সচিব (খাদ্য পরিচালক, অর্থ ও হিসাব বিভাগ) এসএকে আজাদ যে একজন দূর্নীতিবাজ, চরিত্রহীন, শঠ ব্যক্তি এটি তার সন্তানরাই সে সংবাদ সম্মেলন উল্লেখ করেছেন।

তিনি মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে আমার বিরুদ্ধে যে ভিত্তিহীন প্রোপাগাণ্ডা ছড়িয়ে আমাকে সামাজিক ভাবে হেয় প্রতিপন্ন করেছেন আমি তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।