আলফাডাঙ্গায় বস্তা পদ্ধতিতে আদা চাষ

আলফাডাঙ্গায় বস্তা পদ্ধতিতে আদা চাষ

রিয়াজুল ইসলাম রিয়াজ:

বানিজ্যিক ভাবে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে বস্তায় আদা চাষ। স্বল্পপুজি বিনিয়োগ করে অল্প সময়ে উচ্চমুল্যের মসলা ফসল আদা চাষে বস্তা পদ্ধতিতে ঝুঁকছেন কৃষি ও তরুন উদ্যোক্তারা।

সম্প্রতি ফরিদপুর জেলার আলফাডাঙ্গা উপজেলার টগরবন্দ ইউনিয়নের টিটা গ্রামে শুরু হয়েছে বস্তায় আদা চাষ। টিটা গ্রামের জাহাঙ্গির মিয়া, মালার মাসুদ পারভেজ, ফরিদপুরের বাহারুল ইসলাম মিলে দেড় একর জমির মাছের ঘেরের পাড়ে বস্তায় আদা চাষ করছেন। এ পদ্ধতিতে আদা চাষে এলাকায় রীতিমত তাক লাগিযে দিয়েছেন তারা।

চাকরী সুত্রে দেশের উত্তরাঞ্চলে থাকাকালিন আদা চাষের প্রচলন দেখে, উদ্বুদ্ধ হন কৃষি উদ্যোক্তা মাসুদ পারভেজ। তার সাথে বস্তায় আদা চাষের উদ্যোগে যোগ দেন জাহাঙ্গীর মিয়া ও বাহারুল ইসলাম। পরবর্তীতে আলফাডাঙ্গা উপ- সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ রাকিবুল ইসলামের সার্বিক সহযোগীতায় পুকুর পাড়ে সমন্বিত ভাবে বস্তায় আদা চাষ শুরু করেন চাষীরা।

আদা চাষে বস্তা একটি লাভ জনক পদ্ধতি। পুকুরে মাছ চাষের পাশাপাশি অব্যবহৃত পাড়ে আমরা বস্তায় আদার চারা রোপন করেছি। খোলা জায়গা, পতিত জমি, ছাদে, বাড়ির আঙ্গিনায়ও বস্তায় আদা চাষ করা যায় বলে জানান, আদা চাষী জাহাঙ্গীর মিয়া। উপজেলা কৃষি অফিস কর্তৃক এবং ইউটিউব এবং অনলাইন ভিত্তিক বিভিন্ন তথ্যের ভিত্তিতে আদা চাষে আগ্রহী হয় কৃষি উদ্যোক্তারা।

বস্তায় আদা চাষের প্রক্রিয়া ও পরিচর্যা সম্পর্কে ঢাকা টাইমসে আরেক উদ্যোক্তা মাসুদ পারভেজ জানান, আদা চাষের জন্য বস্তা, বেলে দোঁআশ মাটি, ছত্রাক নাশক স্প্রে, পানি স্প্রে ও কীট নাশক দেয়া লাগে। চৌত্র বৈশাখ মাসে আদার চারা রোপন করতে হয়। ১১ মাসের মাথায় আদা বিক্রির উপযোগী হয়ে ওঠে। পচন রোগের জন্য ১০-১৫ দিন পর পর স্প্রে করতে হয়। ভাল বীজ ছাড়া বস্তায় আদা চাষে লাভবান হওয়া যায় না। পরিচর্যার ক্ষেত্রে আদায় সাধারণত ছত্রাকের আক্রমণ বেশি হয় কাণ্ড পচা গোড়া পচা এবং উপরে কিছু ছত্রাকের আক্রমণ হয়ে থাকে। কখনো কখনো কীটনাশক এর প্রয়োজন হতে পারে।

কৃষি উদ্যোক্তা বাহারুল ইসলাম বলেন, আমাদের প্রজেক্ট ২০ হাজার বস্তা দিয়ে শুরু করার ইচ্ছা ছিল। কিন্তু মৌসুম শেষ দিকে হওয়ার কারনে প্রায় দশ হাজার বস্তা দিয়ে শুরু করি। বস্তা প্রতি সব মিলিয়ে ৭০-৮০ টাকা খরচ হয়েছে। ফলন ভাল হলে বস্তা প্রতি এক থেকে দেড় কেজি আদা পাব। দশ হাজার বস্তায় আমরা ২০ লক্ষ টাকা বিক্রির আশা করছি আমরা।

আলফাডাঙ্গা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা রাকিবুল ইসলাম বলেন, পরীক্ষামুলক ভাবে এই প্রথম আলফাডাঙ্গাতে বানিজ্যিক উদ্যেশ্যে বস্তায় আদা চাষ করছেন চাষীরা। আমি ব্যক্তিগত ভাবে তাদের উদ্যোগে পাশে দাঁড়িয়েছি৷ রংপুর থেকে উন্নত বীজ কুরিয়ারে এনে তাদের বিতরন করেছি। এখনও ১০-১৫ দিন পরপর পর্যবেক্ষন করছি। আদা চাষে সার ও কীটনাশক প্রয়োগের বিষয়ে তিনি আরো জানান, বস্তার মাটির প্রস্তুত করার জন্য বেলে দোয়াষ মাটি, বালি, ছাই, রাসায়নিক সার যেমন টিএসপি, এমওপি, দস্তা, জিপসাম, বোরণ, এস ও পি,ক্লোরোপারিফস অথবা ফিফ্রোনিল 3 জি আর।এইগুলা দিয়ে মাটিকে মিশ্রণ করে দশ দিন মাটিকে ফেলে রাখতে হয় এরপর বস্তায় ভরতে হয়। বস্তায় আদা চাষ বাড়তি কোন জমির প্রয়োজন হয় না অনাবাদি পতিত জমি বিশেষ করে ছায়াযুক্ত জায়গায় চাষ করা যায়।