সাবেক ডিএমপি কমিশনার আছাদের অবৈধভাবে দখলে থাকা মার্কেট গুলিয়ে দিলেন প্রকৃত মালিকরা 

সাবেক ডিএমপি কমিশনার আছাদের অবৈধভাবে দখলে থাকা মার্কেট গুলিয়ে দিলেন প্রকৃত মালিকরা 

বিশেষ প্রতিনিধি:

ফরিদপুরে সাবেক ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়ার অবৈধভাবে দখলে থাকা মার্কেট গুড়িয়ে দিলেন প্রকৃত মালিকের উত্তরসুরিরা।

 

শুক্রবার সকালে ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নে এই ঘটনা ঘটে। ইউনিয়নের চান্দড়া মৌজায় থাকা এই মার্কেট ভেকু দিয়ে গুঁড়িয়ে দেন জমিটির প্রকৃত মালিক বীর মুক্তিযোদ্ধা এটিএম নাসির উদ্দিন আহমেদ ওরফে আব্দুর রাজ্জাক মিয়ার উত্তরসুরিরা।

 

জানা গেছে, বীর মুক্তিযোদ্ধা এটিএম নাসির উদ্দিন আহমেদ ক্রয় সূত্রে ১৯৯৭ সাল থেকে চান্দড়া মৌজার ১৫ শতাংশ এই জমি ভোগ দখল করে আসছিলেন। এই জমির পাশেই আছাদুজ্জামান মিয়ার সহধর্মিনী আফরোজা জামানের নামেও জমি রয়েছে। এই জমি থাকার সুবাদে পাশের নাসির উদ্দিনের জমি নানাভাবে দখলের চেষ্টা করেন আছাদুজ্জামান। পরবর্তীতে আদালতে মামলা হলে সেই মামলায় রায় আসে নাসির উদ্দিনের পক্ষে। কিন্তু সাবেক ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া ক্ষমতার অপব্যবহার করে ২০১৭ সালে পুলিশ দিয়ে নানাভাবে হয়রানির মাধ্যমে নাসির উদ্দিনের ক্রয়কৃত ১৫ শতাংশ জমির রাস্তার পাশের অংশে অবৈধভাবে দখল নিয়ে মার্কেট নির্মাণ করেন। আজ শুক্রবার সকালে সেই মার্কেট ভেঙে ফেলে সাইনবোর্ড লাগিয়ে দেন নাসির উদ্দিনের উত্তরসরিরা।

 

জানতে চাইলে প্রকৃত মালিক বীর মুক্তিযোদ্ধা এটিএম নাসির উদ্দিন আহমেদের ছোট ছেলে রেজওয়ান বলেন, ১৫ শতাংশ জমি ক্রয়সূত্রে আমরা ১৯৯৭ সাল থেকে ভোগ দখলে ছিলাম। আমাদের জমিটি সাবেক ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া দখলে নিতে নানাভাবে আমাদের হয়রানি করে। একপর্যায়ে আদালতে মামলা হলে ২০১০ সালে রায় হয়। সেই রায় আমাদের পক্ষে আসে। তখনও আমরা দখলে ছিলাম। পরবর্তীতে ২০১৭ সালে আছাদুজ্জামান মিয়া পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা হওয়ার কারণে ক্ষমতার অপব্যবহার করে আমাদের নামে নানা ধরনের মিথ্যা মামলা, পুলিশি হয়রানি করে অবৈধভাবে জোরপূর্বক দখলে নিয়ে মার্কেট নির্মাণ করেন। আজ আমরা আমাদের জমিতে থাকা অবৈধ মার্কেট ভেঙে দিলাম।

 

সম্প্রতি আছাদুজ্জামান মিয়া ও তার পরিবার হাজার হাজার কোটি টাকার অবৈধ সম্পদের মালিক বলে অভিযোগ ওঠে।

 

একাধিক গণমাধ্যমে সংবাদ আসার পর আছাদুজ্জামান মিয়ার অবৈধ সম্পদের অনুসন্ধান করতে দুদকে অভিযোগ জমা পড়ে। তবে দুর্নীতিবিরোধী সংস্থাটি রহস্যজনক কারণে দুর্নীতির উপযুক্ত নথিপত্র পেয়েও আছাদুজ্জামানের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানে নামেনি। সুপ্রিম কোর্টের এক আইনজীবী সাবেক ডিএমপি কমিশনারের অবৈধ সম্পদের দ্রুত অনুসন্ধান চেয়ে দুদককে নোটিশও দিয়েছে।

 

স্থানীয় জানান, সাবেক ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়ার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠার পর থেকে তাকে আর দেখা যায়নি। তবে মাঝে কয়েকবার দেখা গেলেও শেখ হাসিনা সরকারের পতনের দাবিতে আন্দোলন জোরালো হওয়ার পর থেকে তাকে একেবারেই দেখা যাচ্ছে না। সম্ভবত তিনি আত্মগোপনে রয়েছেন।